অপ্রতিরোধ্য মাদক কারবারি ও ভূমিদস্যুকে আটক করেছে কচাকাটা থানার পুলিশ মানবকথা মানবকথা প্রকাশিত: ১২:১৪ অপরাহ্ণ, মে ২২, ২০২৫ কুড়িগ্রাম থেকে মোস্তাফিজুর রহমান : কুখ্যাত সন্ত্রাসী বাহিনীর গডফাদার মাদক ব্যবসায়ী বঙ্গসোনাহাট ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক বহু মামলার আসামী মিজানুর রহমান মিজুর ছোট ভাই চিহ্নিত মাদক কারবারি ভূমিদস্যু আব্দুর রাজ্জাককে মাদকদ্রব্যসহ গতকাল গ্রেফতার করে জেল হাজতে পাঠিয়েছে কুড়িগ্রামের কচাকাটা থানার চৌকস পুলিশ। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কচাকাটা থানার চৌকস পুলিশ অফিসার ওসি মোঃ নাজমুল আলম লিংকন। ঘটনার বিবরণ থেকে জানা গেছে- কুড়িগ্রাম জেলার ভূরুঙ্গামারী উপজেলাধীন বঙ্গসোনাহাট ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক, কুখ্যাত সন্ত্রাসী, মাদক সম্রাট ভূমিদস্যু, চাঁদাবাজ, খুনি ও ডজনেরও অধিক মামলার আসামী মিজানুর রহমান মিজু সম্প্রতি ২৫/২/২০২৫ইং তারিখে অপারেশন ডেভিল হান্ট অভিযানে আটক হওয়ার খবরে এলাকায় স্বস্তি ফিরে আসে এবং মিষ্টি বিতরণ করেন এলাকাবাসী। কিন্তু পরিতাপের বিষয় হলো মাত্র ১৭ দিনের মাথায় হাইকোর্ট থেকে জামিনে বেরিয়ে এসেই এলাকায় নতুন করে পুরোদমে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় সচেতন মহল। চাঁদাবাজি, মাদক কারবারী জমি দখল ও সন্ত্রাসী কার্যকলাপ জোরদার করেছে। ইতোমধ্যেই হুমকি দিয়ে এলাকা ছাড়া করেছে অনেক নিরীহ জমির মালিককে। যারাই মিজুর অপকর্মের বিরোধীতা করে তাদেরকেই মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করতে থাকে। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মিজু মাত্র কয়েক বছর আগেও ছিল ছিঁচকে চোর, ভূমিহীন, ভবোঘুরে, ছিনতাইকারী এবং কাজ করতো কুলি হিসেবে সোনাহাট স্থলবন্দরটিতে। মিজুর পিতা আলিমুদ্দিন আছে মাত্র কয়েক শতক জমি। উল্লেখ্য যে, মিজু চুরি করে ধরা পড়ে জনতার হাতে কয়েকবার প্রহারের শিকারও হয়েছে বলে অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে। অথচ এ চোর, ভূমিহীন ও কুলি মিজু আওয়ামী যুবলীগের ইউনিয়ন সেক্রেটারীর পদপেয়ে এখন কোটি টাকা আর বিশাল বিত্ত বৈভবের মালিক। সিএন্ডবি রাস্তার একাংশ জবর দখল করে ৫ তলা ভবনের ভিত্তির উপর ৩ তলার আলিশান বিলাসবহুল ভবন সোনাহাট ক্যাম্পের মোড় সংলগ্ন দক্ষিণ দিকে শঠিবাড়ি এলাকায়। সেমি পাকা আরো ২টি বাড়ি, ৪০ বিঘা জমি, ২টি ট্রাক (ভারতের অভ্যন্তরে), ‘মাহি-মিশু এন্টারপ্রাইজ’ নামে আমদানি রপ্তানিকারক পাথরের ব্যবসা, ভাইদের নামে খুলে দিয়েছে অনেক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, কোটি কোটি টাকার ব্যাংক ব্যালেন্স, বিপুল স্বর্ণালংকার। কিন্তু প্রশ্ন, চোর, ভূমিহীন ও কুলি মিজু কিভাবে এত কম সময়ে এত সব বিত্ত বৈভবের মালিক বনে গেল? সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, আওয়ামী যুব লীগের ক্ষমতার জোরে এলাকায় ভীতি আর আতঙ্ক সৃষ্টি করে সন্ত্রাসী মিজু মাফিয়া কায়দায় একের পর এক অপরাধ কর্মকান্ড চালিয়ে যাচ্ছে অপ্রতিরোধ এবং কোন রূপ বাধা ছাড়াই। এখানে উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো সন্ত্রাসী মিজু যে সরকারের পদপদবীর জোরে দিদাহীনভাবে মাদক ব্যবসাসহ সন্ত্রাসী কাজ কর্ম করে অতি অল্প সময়ের মধ্যে ছিঁচকে চোর থেকে কুলি, কুলি থেকে কোটিপতি সে সরকারের আমলেই তার বিরুদ্ধে মামলার পাহাড় গড়ে ওঠে তার বিরুদ্ধে। মামলাসমূহ: ১। জিআর নং-৭৪/২২ (কচাকাটা) বিয়ে বাড়িতে খুনের মামলা, ২। জিআর নং-২০৫/২৪ (ভূরুঃ) বৈষম্যবিরোধী, ৩। জিআর নং-১৭/২৫(ভূরুঃ) বৈষম্যবিরোধী, ৪। জিআর নং-১৩৫/২১(ভূরুঃ) মাদক, ৫। জিআর নং-১০৪/২০(ভূরুঃ), ৬। জিআর নং-৬৫/২০১৮(ভূরুঃ), ৭। জিআর নং- ০৩/২২, ৮। জিআর নং-০৭/২২, ৯। এফ আই আর নং-১৭/২০১৮, ১০। এনজিআর নং-১২১/২৪(কুড়িঃ) ১১। জিআর নং-১৬০/১৩ (ভূরুঃ), ১২। জিআর নং-৮৬/২০১৭ (ভূরুঃ), ১৩। জিআর নং-১৬/২০১৮, ১৪। সিআর নং-১৪৯/১৩ (ভূরুঃ), ১৫। ১৪৮/১৩ (ভূরুঃ)। ভূমিদস্যু ও দখলবাজি হিসেবে মিজু বানুরকুটি মৌজার সোনাহাট স্থলবন্দর থেকে ৩.৩০ একর জমি জবর দখল করেছে বলে অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে। তার জবর দখলীয় এক শতক জমির মূল্য তিন লক্ষ টাকার উর্ধ্বে। এ জমিগুলো সোনাহাট স্থলবন্দরের বাণিজ্যিক জমি। সেই হিসেবে ৩.৩০ একর জমির মূল্য দাঁড়ায় ৩.৩০ ৩,০০,০০০/-) ৯,৯০,০০,০০০/- (নয় কোটি নব্বই লক্ষ) টাকা। আরো ২.০০ একরের মত বিভিন্ন মালিকের জমি জবর দখল করে নিজের কব্জায় রেখেছে। এ ছাড়াও মিজু আরো ২০ একর জমি দখলের পায়তারা করছে এবং ২০জনকে বিবাদী করে একটি মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করছে। এমন অনেক ভিকটিম আছে যাদের একমাত্র সম্বল বসতবাড়ি। ভূমিদস্যু মিজু সেটুকু পর্যন্ত দখল করেছে। দখলবাজ মিজু দরিদ্র ভূমি মালিকের বেচেঁ থাকার শেষ সম্বলটুকু (বসতবাড়ি) দখল পর্যন্ত করেছে। এতেও ক্ষান্ত না হয়ে দখলবাজ মিজু বাড়ির মালিক জায়দা ও ফাতেমাকে মার ডাঙ্গ করে এক কাপড়ে বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এমনকি ভিকটিম জায়দা মামলা করলে মিজু রাস্তায় ছুরি ধরে মামলা তুলে নিতে বাধ্য করে। মিজু জমি দখলে নেওয়ার পরেও জমির মালিকদের হাজত পর্যন্ত খাটিয়েছে। তাদের মধ্যে অন্যতম ভিকটিম মৃত আবু সুফিয়ান, মৃত আঃ মোন্নাফ, আহম্মদ আলী, আব্দুর রাজ্জাক মন্ডল, নজরুল, ফজলুসহ আরো অনেকে। অন্যদিকে, যাদের বিরুদ্ধে এখনও মিথ্যা মামলায় হয়রানি করছে তাদের মধ্যে নজরুল, ফজলু, করিম, হাসর উদ্দিন অন্যতম। উল্লেখ্য যে, ভিকটিম মৃত আবু সুফিয়ান ও মৃত আঃ মোন্নাফ মিজুর উপর্যুপরি মামলা, হামলা আর হাজতের ঘানি টানতে টানতে হার্ড এ্যাটাকে মারা যায়। জমি দখলের পাশাপাশি মিজু শুরু করে মাদক, ইয়াবা ও ফেনসিডিলের মত মরণব্যাধি নেশার ব্যবসা। যুবলীগের সাইনবোর্ডের পাশে ঝুলিয়ে দেয় ‘মাহি ও মিশু’ নামে আমদানি রপ্তানিকারক পাথরের ব্যবসার সাইনবোর্ড। ভারত থেকে আমদানিকৃত পাথরের ট্রাকের ভিতরে পাথরের আড়ালে আনতে থাকে ইয়াবা ও ফেনসিডিসহ মরণব্যাধি মাদকের চালান। অতি কম সময়ের মধ্যে সোনাহাট স্থলবন্দর ও গোটা সীমান্ত এলাকা জুড়ে গড়ে তোলে মাদকের বিশাল মার্কেট। মিজুর তিন-তিনটি বাড়ি যেন মাদকের কারখানা। গঠন করে মাদক চক্র। দ্রত মাদক ও ইয়াবার বিস্তার ও প্রসার ঘটায় এলাকার শিশু কিশোর এমনকি স্কুলগামী ছাত্ররাও দিন দিন মাদকে আসক্ত হয়ে পড়ছে।★ এ সব অবৈধ কর্মকান্ড আড়াল করার জন্য মিজু তার তিন তলা আলিশান ভবনের প্রথম তলায় খুলে নেয় আওয়ামী লীগ ও যুবলীগের অফিস। পার্টি অফিসে চলে সারাক্ষণ মদ, গাজা, ফেনসিডিল, ইয়াবা ও দেহব্যবসা। এ সবই উম্মুক্ত। সোনাহাট স্থলবন্দর এলাকায় রাস্তার কাজে, জমি ক্রয়-বিক্রয়ে, পাথরের ট্রাকে নিয়মিত চাঁদাবাজি করে আসছে। হুন্ডি কারবারঃ ২০১৮ সালে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কর্তৃক প্রকাশিত ৬২৫ জন হুন্ডি কারবারির মধ্যে সোনাহাট স্থলবন্দর এলাকার হুন্ডি কারবারি মিজুর নামও প্রকাশিত হয়। ২০১৮ সালে মরণব্যাধি মাদকের ভয়াল ছোবলে দেশ যখন টালমাটাল তখন আওয়ামী লীগ সরকার মাদকের ছোবল থেকে দেশকে রক্ষার জন্য মাদক আইন সংশোধন করে মৃত্যুদন্ড কার্যকর করে এবং এক পর্যায়ে ১০৯জনকে ক্রোসফায়ারে দেয়। এ সময় মিজু ক্রোস ফায়ার এড়াতে ভারতে পালিয়ে যায়। যাদের সহযোগিতায় মিজু চোর থেকে কুলি, অতঃপর কুলি থেকে কোটিপতি বনে গেছে তাদের মধ্যে অন্যতম ভূরুঙ্গামারী উপজেলা যুবলীগের সভাপতি আব্দুর রাজ্জাক ও আওয়ামী লীগের সহ- সভাপতি সরকার রকিব আহমেদ জুয়েল। সন্ত্রাসী মিজুর পারিবারিক অবস্থা: প্রসঙ্গতঃ উল্লেখ্য যে, সন্ত্রাসী মিজুর পুরো পরিবার জঘন্যতম সর্বনিকৃষ্ট অপরাধ কর্মকান্ডের সাথে দীর্ঘদিন যাবত ওতোপ্রতোভাবে জড়িত। মিজুর বড় ভাই আমিনুর একজন কুখ্যাত মাদক ও ইয়াবা কারবারি এবং একাধিক মাদক মামলার আসামি। মিজুর ছোট ভাই রাজ্জাক মাদক মামলার আসামী। মিজুর ছোট ভাই রনজু মিয়া মিজুর মাদক ও ইয়াবা কারবারের একান্ত সহযোগি এবং খুনের মামলাসহ একাধিক মামলার আসামি। মিজুর স্ত্রী আনজিনা বেগম মাদক স¤্রাজ্ঞী এবং খুনের মামনলাসহ একাধিক মামলার আসামি। মিজুর ভাতিজা আতিয়ার রহমান সুজন ও সুমন মিজুর মাদক কারবারের সহযোগি এবং খুনের মামলাসহ একাধিক মামলার আসামি। এমতাবস্থায়, এলাকাবাসী মিজুর সব অপরাধ কর্মকান্ডের একান্ত দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি কামনা করে। SHARES সারা বাংলা বিষয়: