ধামইরহাটে ১৭০ তম মহান সান্তাল হুল দিবস পালিত

প্রকাশিত: ৮:২৯ অপরাহ্ণ, জুন ৩০, ২০২৫
Oplus_0

মাসুদ সরকার, ধামইরহাট (নওগাঁ) প্রতিনিধিঃ মহান সান্তাল হুল ১৭০ তম বর্ষপূতি উদযাপন দিবসে তীর নিক্ষেপ প্রতিযোগিতা, পদযাত্রা, আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ৩০ জুন সকাল ১০ টায় নওগাঁর ধামইরহাট উপজেলার জগদল আদিবাসী স্কুল ও কলেজ প্রাঙ্গনে ডাসকো ফাউন্ডেশন এবং হেকস/ ইপার এর থ্রাইভ প্রকল্পের সহযোগিতায়, আদিবাসী নারী মঞ্চ, ধামইরহাট, নওগাঁ এর আয়োজনে মহান সান্তাল হুল ১৭০ তম বর্ষপূতি উদযাপন দিবসে তীরনিক্ষেপ প্রতিযোগিতা, পদযাত্রা,আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়।

হুল দিবস হলো সাঁওতাল বিদ্রোহের স্মরণে পালিত একটি দিবস, যা প্রতি বছর ৩০ জুন উদযাপিত হয়। ১৮৫৫ সালের এই দিনে সাঁওতালরা ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসনের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করেছিলো। হুল শব্দটি সাঁওতালি ভাষায় বিদ্রোহ।
উক্ত অনুষ্ঠানে উদ্বোধক ও প্রধান আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন এস সি আলবার্ট সরেন, সংস্কৃতি কর্মী, সভাপতি-জাতিসত্তা মুক্তি সংগ্রাম পরিষদ ও চেয়ারপার্সন-বাংলাদেশ সান্তাল বাইসি (বিএসবি), অতিথি ও আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন এ এফ এম রুকুনুল ইসলাম, সিনিয়র পার্টনারশিপ কো-অর্ডিনেটর, হেকস/ইপার, মদন দাস-ফোকাল পার্সন, থ্রাইভ প্রকল্প, ডাসকো ফাউন্ডেশন, মো: এ টিএম বদিউল আলম, চেয়ারম্যান ১ নং ধামইরহাট ইউনিয়ন পরিষদ, ধামইরহাট, নওগাঁ, এ্যাড: প্রমিলা টুডু, জজ কোর্ট, ঢাকা, ডা: ফয়েজুল হাকিম (লালা), সম্পাদক-জামুকা, ঢাকা, অধ্যপক: সুদর্শন মালো পাঁচবিবি জয়পুরহাট। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন মেরী মুর্মু, আহবায়ক হুল দিবস উদযাপন কমিটি, জগদল, ধামইরহাট,নওগাঁ।
অনুষ্ঠানের শুরুতে তীর নিক্ষেপ প্রতিযোগিতা এবং পদযাত্রা অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে হুল দিবসের তাৎপর্য তুলে ধরা হয়। অতিথীবৃন্দ তাদের আলোচনায় সান্তাল সম্প্রদায়ের অধিকার নিয়ে কথা বলেন। এ এফ এম রুকুনুল ইসলাম, সিনিয়র পার্টনারশিপ কো-অর্ডিনেটর, হেকস ইপার তার বক্তব্যের মাধ্যমে হুল দিবসের সুন্দর অনুষ্ঠান আয়োজন করার জন্য আদিবাসী নারী মঞ্চ, ধামইরহাট কে ধন্যবাদ জানান। মদন দাস, ফোকাল পার্সন থ্রাইভ প্রকল্প, ডাসকো ফাউন্ডেশন তার বক্তব্যে বলেন সরকারের পাশাপাশি ডাসকো ফাউন্ডেশন আদিবাসীদের উন্নয়নের জন্য কাজ করে যাচ্ছেন। ডা: ফয়েজুল হাকিম (লালা), সম্পাদক-জামুকা তার বক্তব্যে বলেন আদিবাসী ও সংখ্যালঘু জাতিসত্তার জমির উপর তাদের বংশ পরাম্পরায় যে অধিকার রয়েছে, বন ভূমি ও জলাশয়ের উপর আদিবাসী ও সংখ্যালঘু জাতিসত্তার প্রথাগত অধিকারের স্বীকৃতি যেন তারা পায়, সংবিধানে দেশের সকল আদিবাসী সংখ্যালঘু জাতি ও ভাষা-ভাষীর সীকৃতি যেন তারা পায়। হুল বিদ্রোহের ইতিহাস জানতে হবে। অনুষ্ঠানের সভাপতি মেরী মুরমু, আহবায়ক সান্তাল হুল দিবস উদযাপন কমিটি, জগদল তার বক্তব্যে আদিবাসী নারী মঞ্চ, ধামইরহাট গঠনের পিছনে হেকস/ ইপার এবং ডাসকো ফাউন্ডেশন এর অবদানের কথা উল্লেখ করে ধন্যবাদ জানান। তিনি আরও বলেন, এ অনুষ্ঠানটি আয়োজনের মধ্য দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে যে, নারীরা পুরুষের থেকে কোন অংশে কম নন। পাশাপাশি এ ধরনের অনুণ্ঠান যেন প্রতিবছর ইউনিয়ন নারী মঞ্চের উদ্যোগে করতে পারে, সবার প্রতি সে আহবান জানিয়ে, সভার সমাপ্তি ঘোষণা করেন।
আলোচনা সভা শেষে আদিবাসীদের কৃষ্টি কালচার চর্চায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়।