পার্বতীপুরে বিনোদন স্পর্টগুলো তাপদাহে গুড়েবালি

প্রকাশিত: ৮:২৮ অপরাহ্ণ, জুন ১৪, ২০২৫

মোক্তারুজ্জামান মোক্তার পার্বতীপুরঃ
আজ ১৪ জুন পার্বতীপুর উপজেলার বিনোদন স্পর্টগুলোর হালচাল সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, ঈদ পরবর্তী দিনগুলোতে প্রচন্ড তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়ায় ঈদ ভ্রমন পিপাষূরা কমে গেছে বিনোদন স্পর্টগুলোতে। অথচ এ দিনগুলিতে চষে বেড়াত ভ্রমণ পিপাষূূূূূরা। একারণে এবার লাভের চেয়ে লোকসানের কথাই ভাবছে বিনোদন স্পর্ট কর্তৃপক্ষ। সেই সুরে বলছে, অবেলায় যারা আসছে তারাও সংখ্যায় কম। এ কথাগুলো নির্মল কন্ঠে বলছিল, এক বিনোদন স্পর্ট ও মিনি চিড়িয়াখানার মালিক ইন্জিনিয়ার রইচ উদ্দীন বাবলু। এই স্পর্টটি পার্বতীপুর উপজেলা থেকে দক্ষিণ -পশ্চিম কোণে প্রায় ৭ কি.মি. দুরে পল্লীতে অবস্থিত। উপজেলার হাবড়া ইউনিয়নের ৮ নং ওয়ার্ডের উত্তর মরলাই গ্রামের মৃত আবু তালেবের পুত্র ইন্জিনিয়ার রইচউদ্দীন বাবলুর এই বিনোদনপুরী তাপদাহ যেন বিপরীত মুখে দাঁড়িয়েছে। তবুও আশা ভরসার হাল ধরে আজকের দিনাজপুর মিনি চিড়িয়াখানাটি এতদুর আসার কথা জানান। তিনি বলেন, শুরুতেই এটি নাম ছিল আবুবিনোদন তাহের মিয়া এগ্রো ফার্ম। কয়েকটি মরুভূমির প্রাণী দুম্বা ও বিদেশি ছাগলের খামার আবু তাহের মিঞা এগ্রো ফার্ম নামে কয়েক বছর আগে যাত্রা শুরু করি। আর তখন থেকেই মানুষের দৃষ্টি আকর্ষণ করে তোলে দিনাজপুর মিনি চিড়িয়াখানা পার্কটি। এই অনুপ্রেরণা থেকেই আজকের এই চিত্র ফুটে উঠছে। এটি গ্রামীণ পল্লীর নির্মল পরিবেশে প্রতিদিন বিভিন্ন প্রান্ত থেকে শিশু-কিশোর, নারী-পুরুষ আসে। তাই এবারে কিছু খেলনা ও পশু সংযোগ করেছি। এদের মধ্যে জার্মান স্পিস কুকুর, মুরগী কোচিন স্লিল্কি,পাখি ল্যাবাক,বাজারিকা,জাভা শিশুদের বিনোদনে নৌকা। এছাড়াও এখানে রয়েছে মরুভূমির প্রাণী দুম্বা, চিত্রা হরিণ, কচ্ছপ, ইমু পাখি, ময়ূর, তিন পা ওয়ালা শাহীওয়াল গরু, জার্মান স্পিস কুকুর, বানর, অস্ট্রেলিয়ান ঘুঘু, চীনা হাঁস, ককটেল পাখি, বিদেশি কুকুর, ব্রাহমা মোরগ, বিলেতী ইদুঁরসহ নানা প্রজাতির পশু-পাখি। দিনাজপুর মিনি চিড়িয়াখানাটি অল্পদিনেই সবার দৃষ্টি কেড়ে নিয়েছে। এখন গরমের ভাবটা বেশী সেকারণে দর্শনার্থীরা কম আসছে। তবুও সাপ্তাহিক ছুটির দিন শুক্রবার বিকেল বেলায় একটু হলেও ভিড় হওয়ার কথা জানান । এছাড়াও মিনি চিড়িয়াখানাটিকে সিসি ক্যামেরার আওতাভূক্তর রাখার কথাও জানান কতৃপক্ষ। এখানকার স্হায়ী নিলুফা ইয়াসমিন জানান এটি আধুনিকতার ছোঁয়ায় মনোরম প্রাকৃতিক পরিবেশে আদ্ধ। হৈ-হুল্লোড়ের বালাই নেই।

তথাপি সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে , শিশুরাও বিনোদনের আখড়ায় এ গরমে খেলায় মেতে উঠছে। এদের চরকি, দোলনা আরও হরেক কিছুর ব্যবস্থা রয়েছে । এখানে একা কিংবা বন্ধুবান্ধব নিয়ে নিশ্চিত ঘুরা যাওয়ার কথা জানান একাধিক জন। নির্জন বাঁশঝোঁপঝাঁড়ের ভিতরে চুঁড়ইভাতির পিকনিক স্পটও রয়েছে। দর্শনার্থীদের খাবারের ব্যবস্হার মধ্যে ক্যাফ, চটপটি, কপি, লুডুসসহ গ্রামীন বিভিন্ন পদের খাবারের ব্যবস্হাও রয়েছে। এ মিনি চিড়িয়াখানায় সহজে চৌ’দিক থেকে আসা যায়, এমন পথ- পার্বতীপুর থেকে সোজা পশ্চিম দক্ষিণ কোণে এর দুরত্ব প্রায় ৭ কি.মি। ফুলবাড়ী থেকে সোজা উত্তর পশ্চিম দিকে প্রায় ১৮ কি.মি। দিনাজপুর থেকে সোজা পূর্ব দক্ষিণ কোণে প্রায় ৩১ কি.মি। আমবাড়ী হাট থেকে পূর্ব দিকে পাকা রাস্তা ধরে কয়েক কি.মি এলেই চোখে পড়বে লম্বা মিনি চিড়িয়াখানার গেট। এটি ২০২৪ সালের মার্চ মাসের শুরুর দিকে প্রায় দুই একর জায়গা নিয়ে চিড়িয়াখানাটির অবয়ব । এ গরমে আসা শখের চিড়িয়াখানায় এমন দর্শনার্থী ফুলবাড়ি উপজেলার এলুয়াবাড়ির তরিকুল ইসলাম তার পরিবারসহ ঘুরতে আসে। সে তার অনুভূতি ব্যক্ত করে বলেন, চিড়িয়াখানায় বাঘ,ভাল্লুক, হাতি,ঘোড়া, জিরাফ, অজগর সাপ না থাকলে চিড়িয়াখানা মানায় না। তাই কর্তৃপক্ষ যেন এ সব প্রাণী রাখার ব্যবস্হা গ্রহণ করেন।

এমন দর্শনার্থী হিলি ডাঙ্গাপাড়া থেকে আসা মাহাদি,জনি,জাহাঙ্গীর ও আব্দুর রহমান জানান, ঘুরলাম, দেখলাম,ভালোই লাগলো। তবে আরও জায়গা বাড়াতে হবে। জীবজন্তু বৃদ্ধি করতে হবে। তা হলে সৌন্দর্য বাড়বে। দিনাজপুর থেকে মা বাবার সঙ্গে ঘুরতে এসে ছোট্ট শিশু সাদিয়া বলছে, এখানে ঘুরে ঘুরে চিত্রা হরিণ, ময়ূর, কচ্ছপ, ইমু বানর দেখছি আমাকে ভালো লাগছে। মিনি চিড়িয়াখানার গেটম্যান মোজাফফর বলছে, এখানে ২৭ জন কর্মচারীর মধ্যে এখন ৭ জন কাজ করছে। গরমে জ্বালায় সবাই গেছে। আমিও যাব, কারণ দর্শনার্থী নেই। মালিক কীভাবে এদের বেতন দেওয়ার কথা জানান। এ বিষয়ে ঐ এলাকার স্হানীয় মেম্বার মোঃ মতিনাল এবার বলছে, কী প্রচন্ড ভ্যাপসা গরম পড়ছে। এই মিনি চিড়িয়াখানাটি আমার ৮ নং ওয়ার্ডের মধ্যে। আশা করি এটি এলাকাবাসী তথা দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে মানুষ আনন্দ উপভোগ করার মত সুন্দর বিনোদন স্পর্ট। ডিজিটাল যুগে নিরিবিলি পল্লীর নির্জাস, নির্মল, নির্জণ, সমাহারে আনন্দদয়ক স্থান ভ্রমণ পিপাসুদের আড্ডার স্থান হোক, এমন প্রত্যাশার কথা জানান।