আন্তর্জাতিক ডেস্ক : বিতর্কিত লাদাখ সীমান্তে চীনা সৈন্যদের সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষে ভারতের ১ সেনা কর্মকর্তা ও দুই জওয়ান নিহত হয়েছেন। ওই সংঘর্ষে চীনের সেনাও নিহত হয়েছে বলে দাবি ভারতের।
মঙ্গলবার (১৬ জুন) ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি জানায়, সোমবার (১৫ জুন) রাতে লাদাখের গালওয়ান উপত্যকায় ওই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
সম্প্রতি বিতর্কিত লাদাখ সীমান্ত নিয়ে চীন ও ভারতের মধ্যে উত্তেজনা বৃদ্ধি পেয়েছে। এরই সূত্র ধরে দুই দেশই সীমান্তে সেনা মোতায়েন করেছে। কোনো ধরনের সংঘর্ষে না জড়িয়ে আলোচনার মাধ্যমে বিরোধের সমাধানে দুই পক্ষই চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছিল। এরই মাঝে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটলো।
ভারতীয় সেনাবাহিনীর সূত্র জানায়, ওই ৩ সেনা গুলিবিদ্ধ হয়ে নয়, চীনা বাহিনীর সঙ্গে মল্লযুদ্ধে নিহত হয়েছেন। এ নিয়ে বর্তমানে উভয় পক্ষের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বৈঠকে বসেছেন।
১৯৭৫ সালের পর এই প্রথম ভারত-চীনের মধ্যে প্রাণহানি হওয়ার মতো এমন সংঘর্ষের ঘটনা ঘটলো। ১৯৬২ সালে সীমান্ত বিরোধ নিয়ে দুই দেশের মধ্যে সংক্ষিপ্ত যুদ্ধ হয়।
ভারতশাসিত লাদাখের গালওয়ান উপত্যকায় ভারত ও চীনের সেনাবাহিনীর সংঘর্ষে শুধু যে ভারতীয় সেনার তিন সদস্য প্রাণ হারিয়েছেন তাই নয়। সীমান্তের ওপারেও হয়েছে প্রাণহানি। তবে ভারতের থেকে অনেকটাই বেশি। সংঘর্ষে চীনের পাঁচজন সেনা সদস্য প্রাণ হারিয়েছেন বলে জানিয়েছে যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম এক্সপ্রেস।
আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা যায়, সোমবার রাতে ভারত ও চীনা বাহিনীর ‘সংঘর্ষে’ তিনজন ভারতীয় সেনা সদস্য মারা যান। পাশাপাশি চীনের পিপলস লিবারেশন আর্মির পাঁচ সদস্যও প্রাণ হারিয়েছেন। আরো অন্তত ১১ জন চীনা সেনা আহত হয়েছেন।
চীনের সরকারি সংবাদমাধ্যম গ্লোবাল টাইমসের সম্পাদক হু জিজিন টুইট করে বলেছেন, যতদূর আমি জানি, গালওয়ান উপত্যকার সংঘর্ষে চীনের দিকেও প্রাণহানি হয়েছে। আমি ভারতকে বলতে চাই, এত আগ্রাসন ভালো নয়। চীনের সহনশীলতাকে দুর্বলতা ভেবে ভুল করবেন না। চীন ভারতের সঙ্গে যুদ্ধ চায় না, আবার যুদ্ধ করতে ভয়ও পায় না।
দুই দেশের সম্পর্কের গত কয়েক দশকের টানাপড়েনের মধ্যেও এত রক্তক্ষয়ী ‘সংঘর্ষ’ কখনও হয়নি। সোমবার রাতের সংঘর্ষে হাতাহাতির পাশাপাশি দুই দেশের সেনাই মারণাস্ত্র ব্যবহার করেছে। দুই পরমাণু শক্তিধর দেশের মধ্যের এই উত্তেজনা বিশ্বশান্তির জন্য রীতিমতো অশনি-সংকেত দিচ্ছে। #